তরমুজ এবারও কেজিতে বিক্রি

চৈত্র মাসের এই গরমে এক ফালি লাল তরমুজ প্রশান্তি নিয়ে আসবে যে কারোর মনে। রোজা উপলক্ষে বাজারে তাই বেড়েছে তরমুজের চাহিদা। তবে বাজারে এবারও কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তরমুজের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা তাদের পছন্দ মতো তরমুজ কিনে থাকেন। গত বছরের মতো এবারও কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তবে পিস হিসেবেও বিক্রি করা হয়ে থাকে।

মগবাজারের তরমুজ বিক্রেতা খাইরুল হোসেন বলেন, কাস্টমার যেভাবে চায় আমরা সেভাবেই বিক্রি করি। কেউ পিস হিসেবে কেনে, কেউ কেজি হিসেবে। তবে এখন কেজি হিসেবেই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তরমুজের দাম কেমন তা জিজ্ঞেস করতেই বলেন, পিস প্রতি তরমুজের দাম রাখা হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। আকার ভেদে দামের হেরফের হয়। আর পরিমাপ করে বিক্রি করলে দাম রাখা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।

দাম বেশি কেন এই প্রশ্নে খাইরুল বলেন, ‘আড়ত থেকে পিসপ্রতি বিক্রির হিসাব করলেও মূলত তারাও কেজি হিসেবে বিক্রি করে। কেজিপ্রতি তারা দাম বেধে দেয় বলে আমরা কম দামে কিনতে পারি না। তার ওপর আছে আড়তের টাকা, পরিবহন খরচ। সব মিলিয়ে দাম বেড়ে যায়। আর এখন প্রায় সবখানেই তরমুজ কেজি হিসেবেই বিক্রি হয়।

কৃষক থেকে ক্রেতা অবধি আসতে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে পন্যের দাম বেড়ে যায় বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। দিলু রোডের তরমুজ বিক্রেতা তোফাজ্জল মিয়া বলেন, ‘ক্ষেত থেকে যে দামে পণ্য আসে, আড়তে এসে তা দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফলে কৃষক ন্যায্য দাম পায় না, আমরাও বেশি দামে কিনি। তরমুজের মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও দাম কমছে না। এ বিষয়ে কারওয়ান বাজার আদর্শ ফল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম বাবুল বলেন, ‘যখন তরমুজের প্রথম সিজন থাকে তখন কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে এখন পাইকারি ক্রয়-বিক্রয় পিস হিসেবেই হয়। কারওয়ান বাজারে ৪০টির মতো আড়ত রয়েছে। প্রতিদিন এ আড়তগুলো থেকে লক্ষাধিক পিস তরমুজ বিক্রি হয়। আর আড়তের নিজস্ব খরচ হিসেবে আমরা তরমুজ বিক্রির টাকার উপর ৬% টাকা নিয়ে থাকি।’

ক্রেতারাও কেজিপ্রতি কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। মালিবাগ নিবাসী আফজাল হোসেন বলেন, ‘পিস হিসেবে দোকানিরা অতিরিক্ত দাম চায়। তাই বাধ্য হয়েই কেজি হিসেবে কিনছি।’

read more: নারকেল তেলের ৫ আশ্চর্য উপকারিতা

গরমের ফল তরমুজে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, সি ও বি। এ ছাড়া এই ফলে রয়েছে লাইকোপেন ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। মজার ব্যাপার হলো, লাইকোপেনের উপস্থিতির কারণেই এমন লাল টকটকে হয়ে থাকে তরমুজ। আর এসব উপাদানের উপকারিতাও কিন্তু বিশাল। গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের মতো ঝুঁকি কমায় আর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তরমুজে ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি।

গবেষণায় আরও পাওয়া গেছে, তরমুজে থাকা উপাদান লাইকোপেন মানবদেহের কয়েক ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে।

গরমে পানির ঘাটতি কমাতেও তরমুজের জুড়ি নেই। তরমুজে পানির পরিমাণ ৯২ ভাগ। তাই শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে ও পানিশূন্যতা কমাতে তরমুজ অতুলনীয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্যাফেইনের তুলনায় তরমুজ অনেক গুণ বেশি উপকারী। তাই ক্যাফেইন কমিয়ে বেশি বেশি তরমুজ খাওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *