দিনের বেলায় ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস চুরি হয়। দোকানের ১৩টি তালা ভেঙে ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। নিরাপদ পথও নয়। প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্টেশন ও ট্রেনে মোবাইল ফোন সেট ছিনতাই হচ্ছে। গরু চুরির তালিকায় রয়েছে।
গত দুই মাসে অন্তত ৫০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাড়ি থেকে দোকানপাট—সব জায়গায় চোর। রেহাই পাননি সাংবাদিকও। উপজেলা জুড়ে আতঙ্ক। দিনের বেলায়ও দরজা খুলতে ভয় পায়। কেউ এক মুহূর্তের জন্যও ঘর খালি রাখতে চায় না।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সর্বত্রই একটি চক্র বেশ সক্রিয়। বিশেষ করে বাড়িভাড়ার কথা বললে তারা বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে। এ ছাড়া গ্রিল ও তালা কেটে চুরির ঘটনাও ঘটেছে। চক্রের বাইরে স্থানীয় চোররাও কয়েক মাস ধরে বেশ তৎপর।
পৌর এলাকার রাধানগরে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রনক জাহানের বাসায় বাসা ভাড়ার কথা বলতে গিয়ে দিনভর চুরি হয়। এ ঘটনায় অবশ্য বেশ কিছু ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জড়িত নারীদের শনাক্ত করা হয়েছে।
রাধানগরে কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবুর বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে। রাতে এ ঘটনায় গ্রিল কেটে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সেট, ক্যামেরাসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি।
এ ঘটনার দুদিন পর পৌর এলাকার সড়ক বাজারে মনোরমা স্বর্ণ শিল্পালয়ে চুরি হয়। পুলিশ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই দোকান থেকে প্রায় ৪৪ পিস স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়। ১৩টি তালা চুরির পর ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে মহিলার কো’পে ৩ পুলিশ আহত, গ্রেফতার ২
উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সাংবাদিক এম এ জলিলের মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। রাধানগর এলাকায় প্রাইভেট পড়তে এসেছে নতুন সাইকেল ছাত্রী। শাকিল। প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে কৃষকের গরুসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। চলতি সপ্তাহে আখাউড়া রেলস্টেশন থেকে ভারতীয় নাগরিক স্বপন পালের মোবাইল ফোন সেট চুরি হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হাজারীর রাধানগরের বাড়িতে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাছ-মাংস নিয়ে গেছে চোরেরা।
একের পর এক ঘটনায় পুলিশের কোনো ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। মনোরমা শিল্পালয়ের মালিক আশীষ বিশ্বাস জানান, তার দোকান থেকে ৪৪টি সোনার বার খোয়া গেছে। দিন-রাত তার দোকান জনাকীর্ণ এলাকায় থাকা সত্ত্বেও এমন চুরির ঘটনায় তিনি বেশ হতবাক। তিনি থানায় মামলা করেন।
ঘটনার পর তারা কালো পতাকা ওড়ানো, দোকানপাট বন্ধ রাখার মতো কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলেন। তবে জনপ্রতিনিধির অনুরোধে তিনি ওই আন্দোলন থেকে সরে আসেন। এখনো কোনো মালামাল উদ্ধার হয়নি বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
চুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। একটি ঘটনায় চোরাই স্বর্ণও উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী ঘটনায় পুলিশ মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
©2020 SomoyerKhbor All rights reserved ®
Leave a Reply