সিদ্ধান্তহীনতায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে ইসি, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে তিন দফায় নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন ইসি। এসব বৈঠকে ইভিএম নিয়ে দলগুলোর মতামত লিপিবদ্ধ করেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে নির্বাচনে কতগুলো আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার সামর্থ্য আছে, সেটি পর্যালোচনা করার পর সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
গত ১৯ ও ২১ জুন দুই ধাপে ২৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ইভিএম যাচাইয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এই দুই ধাপে ১৮টি দল উপস্থিত থাকলেও সাড়া দেয়নি বিএনপিসহ আটটি দল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১০টি দলের সঙ্গে সব শেষ গতকাল সোমবার তৃতীয় ধাপে বৈঠক করেছে কমিশন।
আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা আসছে। গতকাল সোমবার ইসির বৈঠকেও সেই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন দলের সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইভিএমের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত পরিস্কার এবং স্পষ্ট। মন থেকে চাই, চেতনা থেকে চাই। ৩০০ আসনে ইভিএম হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা সাপোর্ট করি।’
আরও পড়ুনঃ পদ্মা সেতুতে বসছে স্পিড গান-সিসিটিভি
কাদের বলেন, ‘আজকে (মঙ্গলবার) যে রাজনৈতিক দলগুলো এখানে আসছে, আমার মনে হয় অধিকাংশই ইভিএমের পক্ষে বলেছে। ইভিএম নিয়ে বিরুদ্ধেও বলেছেন দুয়েকজন। এটা তো গণতন্ত্র। বিউটি অব ডেমোক্রেসি। বিরুদ্ধে তো বলবেই। ভিন্নমত থাকতেই পারে। সেটা তো কোনো অসুবিধা নেই।’
৩০০ আসনে নির্বাচন করতে ইসি সক্ষম কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘দ্যাট ইজ দ্যা ডিসিশন অব ইলেকশন কমিশন। এটা তাদের এখতিয়ার।’
ভোটারদের মধ্যে ইভিএমের জনপ্রিয়তা আছে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দেখেছি একটা ইউনিয়নের ইলেকশনে রাজশাহীর একটা ইউনিয়ন একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের, সেখানে দিনের আলোও ঠিক মতো যায় না। ঠিক এই রকম একটা জায়গাতেও তো ইভিএমে ইলেকশন হয়েছে। প্রচুর উপস্থিতি এবং মহিলারা পর্যন্ত লম্বা লাইন দিয়ে ভোট দিয়েছে। কাজেই ইভিএম অজনপ্রিয় এ কথা বলার আর এখন কোনো প্রয়োজন নেই।’
তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংলাপে নিবন্ধিত দলগুলোর মতামত লিপিবদ্ধ করেছে ইসি। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।
আলোচনার সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নেই, কিছুদিন পর থেকেই ইভিএম নিয়ে কথাবার্তা পত্রপত্রিকায় চাউর হয়েছিল। আমাদের শুরুতে ইভিএম সম্পর্কে সে রকম ধারণা ছিল না। আমাদের ব্যক্তিগত ধারণাও ছিল না। আমরা ইতোমধ্যেই ইভিএম নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এখন আমাদের মোটামুটি ধারণা আছে।’
সিইসি বলেন
সিইসি বলেন, ‘এর আগে আমরা দুটি সংলাপ করেছি। অনেকেই কিন্তু ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। অনেকে সলুশন দিয়ে বলেছে, আরও উন্নত প্রযুক্তিসহ ইভিএম যদি ক্রয় করা যায় তাহলে আর ভালো হয়। আবার অনেকে সরাসারি বলেছেন, তারা ইভিএমে নির্বাচনে যাবেন না। আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করবো সেটা আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচন লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করব কি-না সে সিদ্ধান্ত নেব।’