ফরিদপুরে রসুন ৫ টাকা কেজি

ফরিদপুর চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঠ এবং নিজ আঙ্গিনা থেকে প্রতি কেজি রসুন ৫-৭ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখাগেছে। সেই রসুন বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজি রসুন ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছরও অনেক কৃষক রসুন চাষ করেছে বলে জানাগেছে। আগামীতে যদি রসুনের দাম এভাবেই নিচের দিক নামতে থাকে,তা হলে কৃষকরা রসুন চাষ করবে না বলে গনমাধ্যম কে জানিয়েছেন।ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা, মধুখালী, সদর উপজেলা, সদরপুর,চরভ্রাসন, ভাঙ্গা উপজেলায় খুব বেশী মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পিয়াজ ও রসুনের আবাদ বেশি হয়।

এর মধ্যে সদর উপাজেলার নর্থচ্যানেল,অম্বিকাপুর,মাধবদিয়া,ঈশানগোপালপুর, নগরকান্দা,সালথা ও ভাঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকার মাঠ জুড়ে আবাদ করা হয় রসুন।

গত বছর এ জেলায় রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছিল। এ বছর রসুন বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভবনা। কিন্ত দাম নিয়ে শঙ্কার শেষ নাই। উল্লেখিত তথ্য নিশ্চিত করছেন, সদর উপজেলার আদর্শ কৃষক সেকেন্দার মিয়ার ছেলে শওকতক সেকেন্দার। তিনি আরো বলেন, কৃষকরা রসুন নিয়ে পড়ছেন মহাবিপাকে।

পুরাতন রসুন এখন প্রতি মন ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে। কৃষক হোসেন বলছেন, রসুন চাষ করে এখন লাভের মুখ দেখা তো দুরের কথা কামলা খরচই উঠছে না।

চরমাদবদিয়ার কৃষক হাচান ফকির বলেন, এ বছর তিনি ২ বিঘা জমিতি রসুন আবাদ করছেন। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০/৫৭ হাজার টাকা।

দুই বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করছেন। ৪০ মন রসুন পেতে পারেন, যা বিক্রি হবে প্রতি মন ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা মন দরে বিক্রি হবে। সব মিলিয়ে রসুন চাষ করে ক্ষতি হবে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত।
নগরকান্দার কৃষক সেকেন মাতুব্বর বলেন,এবার রসুনের দাম একেবারেই কম।পুরাতন রসুন তারা কিনছেন মাত্র ৩০০ টাকা মণ ধরে। বাজারের সেরা রসুনের দাম পড়ছে মাত্র ৩৩০-৩৫০ টাকা।

সদরপুরের বিশিষ্ট সাংবাদিক হাওলাদার লতিফুল হক বলেন, সদরপুর বাজার রসুন এবার পানির দামে বিক্রি হচ্ছে।তাছাড়া বাজারে এখন দেশী রসুনের কদর কম।

কারন বিদেশী রসুন দেখতে বড় এবং লোভনীয় সেদিকেই মানুষ বেশী চাপে। ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক হযরত আলী গনমাধ্যম কে বলেন,চলতি বছর জেলায়, রসুন আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ২ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে।

ফলনও ভাল হয়েছে। তবে রসুনের দাম যেভাবে কমছে তাতে কৃষকরা কষ্টের মুল্যও ঘরে তুলতে পারবেন কিনা সন্দেহ আছে।

রসুনের কম মুল্য হওয়ার বিপরীতে চরাঞ্চলেের কৃষকরা বলেন,চর থেকে শহরের দুরত্ব প্রায় ২৫/৩০ কিলো, এখান থেকে শহরের গাড়ি ভাড়া জন প্রতি ৪০ টাকা। আসা যাওয়ায় ৮০ টাকা। মালসহ গাড়ী ভাড়া ১৫০ টাকা। এক মন রসুন বাজারে বিক্রি করি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। তার চেয়ে নদী পথে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ,মীরকাদিম, কমলঘাট,দোহার,নবাবগঞ্জ থেকে যে সব মহাজনরা আসেন তাদের কাছে ফসলের ক্ষেত থেকে ৫-৭ টাকা কেঁজি দরে বিক্রি করলেই আমাদের ভাল হয়।

তাছাড়া কামলাদের মুল্যও অনেক চড়া। আগে ৪০০ টাকায় একজন কামলা মিলতো এখন একজন কামলার দাম ৬০০/৬৫০ টাকা। তার পর দুই বেলা খাওন দেওন লাগে। তাতে সব মিলে দেখা যায়, এক মন প্রায় ৬ মন রসুন সমান। মানে, একজন কামলার দাম।

কৃতজ্ঞতা: আনোয়ার জাহিদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *