মিয়া সৈকত, ফরিদপুরঃ
ফরিদপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক পদ নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা তৈরী হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ফরিদপুর পৌরসভার ৫ং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর সভাপতি আক্তার হোসেন মৃধা ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক (০৩)মোয়াজ্জেম সিকদার এই দুই জনের যৌথ ছবি দিয়ে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ফেষ্টুন বানিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে লাগানো হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছেড়ে দিয়েছেন । আক্তার হোসেন মৃধার নামের পাসে সভাপতি পদবী থাকলেও মোয়াজ্জেম সিকদার এর নামের পাসে যুগ্ন সাধারন সম্পাদক পদবী নেই, লেখা রয়েছে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক। এ নিয়ে ওয়ার্ড ব্যাপী জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সমর্থকদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে এক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নামের পাশে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক কেন লেখা হয়েছে এ ব্যাপারে মোয়াজ্জেম সিকদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, নামের পাশে যে পদবী লিখেছি তা আমি নিজ ইচ্ছায় লিখিনি। শহর আওয়ামীলীগ এর সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ উপরস্থ নেতারাই মৌখিক ভাবে এই পদবী লেখার অনুমতি দিয়েছেন, আর ওয়ার্ডের সভাপতি আক্তার হোসেন এবং আমার দুই জনের যৌথ ছবি দিয়ে ফেস্টুন বানিয়ে লাগাতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, দল এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কারন আমার জানা নেই তবে ধারনা করা যাচ্ছে , সামচু মোল্লাকে দলীয় প্রোগ্রামে তেমন পাওয়া যায় না, তার পরিবর্তে সব সময়ের জন্য আমাকেই যেতে হয় যে কোন প্রোগ্রামে, যা সবার নজরে পরেছে, আর এই কারনেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর সভাপতি আক্তার হোসেন মৃধা বলেন, আমরা শহর আওয়ামীলীগ এর আওতাধীন, তাই দলীয় সিদ্ধান্ত আমরা মানতে বাধ্য, সামচু মোল্লা এবং মোয়াজ্জেম হোসেন দুই জনই আমার খুব কাছের মানুষ। দল আমার সাথে যাকেই কাজ করার সুযোগ দিবে আমি তাকে নিয়েই কাজ করবো আমার ওয়ার্ড এর জন্য। আর সামচু মোল্লাকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিনা জানি না বা সে নিজেই অব্যহতি নিয়েছেন কিনা এই বিষয়ে কিছু জানি না, তবে এই সিদ্ধান্তের জন্য সম্ভাবত রেজুলেশন করা হয়েছে।
সামচু মোল্লার সাথে কথা বললে তিনি যানান, এটি তার বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত, দল টিকিয়ে রাখার জন্য ওয়ার্ড এ তার ভুমিকা ব্যাপক। হঠাৎ এমন একটা বিষয় দেখে সে নিজেই অবাক, দল থেকে কাউকে বাদ দিতে হলে তাকে নোটিশ করতে হবে, কারন দর্শাতে হবে, কিন্তু তাকে এমন কিছুই করা হয়নি।
তিনি আরোও বলেন, দল যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তবে তা সংবিধান অনুযায়ী। মোয়াজ্জেম হোসেন হচ্ছে তিন নম্বর যুগ্ম সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত হলে হবে ১ম জন, ৩ নম্বর জন হয় কিভাবে?
উল্লেক্ষ্য, ফরিদপুর শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী ও সাধারন সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডঃ সুবল চন্দ্র সাহার বাড়ী ভাংচুর মামলায় তারা গ্রেফতার হয়, এর পর তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মাহাতাব আলী মেথু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির দায়িত্ব পালন করছেন।
ঘটনার বিষয় বস্তু সম্পর্কে শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মাহাতাব আলী মেথুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামচু মোল্লাকে বহিষ্কার করা হয়নি, বহিষ্কার এর জন্য সুনির্দিষ্ট কারন দর্শানো নোটিশ করা হবে, জবাব চাওয়া হবে, তার পরে কাউকে বহিষ্কার করা যাবে। এটা ওয়ার্ড থেকে কি ভাবে কি করা হয়েছে সেই বিষয়ে আমি ভালো জানি না, আমি ১০/১২ দিন যাবৎ অসুস্থ অবস্থায় আছি যার কারনে অনেক বিষয়ই অজানা রয়েছে, তবে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের সাথে কথা বললে আপনি বিষয়টি সম্পুর্ন পরিষ্কার ভাবে জানতে পারবেন।
এ বিষয়ে শহর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সামচু মোল্লাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি, তিনি স্বপদেই বহাল আছেন আর আমরা কাউকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করিনি। কাউকে বাদ দেওয়া বা কাউকে দায়িত্ব দেওয়া মৌখিক ভাবে হয় না, এজন্য মিটিং করে রেজুলেশন করে সবার সম্মতিতে করতে হয়। যিনি ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লিখেছেন তিনি না বুঝে লিখেছেন। সামচু মোল্লা দলীয় কার্যক্রমে অনিয়মিত হওয়ায় তাকে বদলায় কাজে নিয়মিত করতে আমরা চেষ্টা করছি। যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা আমরা দু একদিনের মধ্যে বসে সমাধান করে দিবো।