দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লেই দেখা দিতে পারে অক্সিজেন সংকট। তাই যেকোনো সংকটাপন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগে থেকেই অক্সিজেন নিয়ে ভাবছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এরইমধ্যে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। তবে সংকট এড়াতে করোনার বিস্তার কমিয়ে আনার ওপর জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র ও জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে যে পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদন হয় এটা দিয়ে এখনও অক্সিজেনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাসে রোগী বেড়ে গেলে অক্সিজেন সংকট দেখা দিতে পারে।
রোবেদ আমিন বলেন, প্রতিবেশী ভারতে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ার পরিস্থিতির মধ্যে দেশটিতে অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছিল। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে অনেক রোগী। দেশে এমন পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সরকার আগে থেকেই সর্তক অবস্থায় রয়েছে।
বর্তমানে সময়ে অক্সিজেনের চাহিদা কেমন এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি আরও বলেন, সারাদেশে অক্সিজেনের চাহিদা ১২০ থেকে ১৫০ টনের মতো। তবে সংক্রমণ বাড়লে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়বে। অক্সিজেনের চাহিদা আমরা দেখেছি এপ্রিল মাসে যখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছিল তখন দৈনিক চাহিদা ছিল প্রায় ১৯০ টন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, আমাদের দেশে যেসব অক্সিজেনের প্ল্যান্টগুলো রয়েছে, সেগুলো যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত। অক্সিজেন উৎপাদন ও সরবরাহকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লিনডে ও ইসলাম অক্সিজেন মেডিকেলে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। এদের থেকে নিয়েই আমাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তবে সংক্রমণের চাহিদা বাড়ার কারণে এছাড়া অন্যান্য কোম্পানি যারা শিল্প-কারখানার জন্য অক্সিজেন তৈরি করে তাদের কাছেও আমরা যোগাযোগ করছি।
তিনি আরও বলেন, আবুল খায়ের গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি ইস্পাত কোম্পানিও শিল্প-কারখানার জন্য অক্সিজেন উৎপাদন করে থাকে। তাদের সঙ্গেও স্বাস্থ্য অধিদফতর যোগাযোগ করছে। আমাদের মহাপরিচালকের নিজস্ব উদ্যোগের কারণে আবুল খায়ের গ্রুপ এগিয়ে আসছে। করোনা সংক্রমণ বাড়লে তাদের অক্সিজেন দিয়েই দেশের অক্সিজেনের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
অক্সিজেন সংকট নিয়ে সতর্ক স্বাস্থ্য অধিদফতর,, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে হাসপাতালে শয্যাও পাওয়া যাবে না
সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই করোনা হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যাও পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, গত এক মাসের তুলনায় সংক্রমণের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভিড় আমরা হাসপাতালগুলোতে আবারও দেখতে পাচ্ছি।
রোবেদ আমিন বলেন, হাসপাতালগুলোতে দ্রুতই শয্যা সংখ্যা পূরণ হয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতালের আইসিইউ পূরণ হয়ে গেছে। বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউও পূরণ হয়ে যাচ্ছে। মাত্র ২৮১টি শয্যা খালি রয়েছে। প্রায় ৫০ ভাগ শয্যাই পূরণ হয়ে গেছে গত মাসের তুলনায়।
তিনি বলেন, দেশের সবগুলো সীমান্তবর্তী জেলাতেই সংক্রমণ বেশি, এবং সেগুলোতেই মৃত্যু বেশি।
©2020 SomoyerKhbor All rights reserved ®
Leave a Reply