টাঙ্গাইলের গোপালপুরে করোনাকালে বেকার হয়ে যাওয়া এক অভাবি বাবা তার কোলের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে উপজেলা প্রশাসন শিশুটিকে উদ্ধার তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। শুক্রবার (১৬ জুলাই) উপজেলা প্রশাসন শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়।
জানা গেছে, উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম ও রাবেয়া দম্পতির তিন ছেলে সন্তান। এদের মধ্যে গত ১৬ দিন আগে তিন মাস বয়সী ছেলে আলহাজকে ৪৫ হাজার টাকায় ঘাটাইলের বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেন শাহ আলম।
রাবেয়া বলেন, দিনমজুর স্বামী শাহ আলমের রোজগারে পাঁচজনের সংসার চলে না। করোনার কারণে কয়েক মাস ধরে শাহ আলম বেকার। সংসারে বেশ কিছু ঋণ রয়েছে। পাওনাদাররা প্রতিদিনই তাগাদা দিচ্ছিল। এরই মধ্যে স্বামী শাহ আলম গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় পাওনা টাকা পরিশোধ এবং সংসারে অভাবে কারণে তিন মাস বয়সী আলহাজকে বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতির নিকট ১৬ দিন আগে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় শাহ আলম।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, সবুজ ও স্বপ্না দম্পতি নিঃসন্তান। তারা শাহ আলম-রাবেয়া দম্পতির অভাবের সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে শিশুটি কিনে নেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা সেটি করেননি। এমতাবস্থায় প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলেপৌঁছে দেয়। কেউ আগ্রহ প্রকাশ না করায় এবং মানবিক দিক বিবেচনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ মল্লিক জানান, ঘটনাটির নেপথ্যে রয়েছে দারিদ্র্য। পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। রাবেয়া বেগমকে পৌর শহরে নুরুল ইসলামের ক্লিনিকে আয়া পদে চাকরির ব্যবস্থা করাসহ নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের সাহায্য অব্যাহত থাকবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি জানান, ওই শিশুর যাবতীয় ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল