somoyerkhbor.com

কানাইপুরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত শোডাউন, গ্রেফতার পাঁচ

মোঃ সৈকত হাসান

কানাইপুরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত শোডাউন, গ্রেফতার পাঁচ, এসপি আলিমুজ্জামান ফরিদপুর জেলা ত্যাগ করার সাথে সাথেই, কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আসলাম ও পদ প্রত্যাশী সোহাগকে ভয় দেখাতে, খাজা বাহীনীর লোকজনের, রামদা ছোড়া লাঠি সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে, থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সৌরভের নেতৃত্বে মহাসড়কে শো ডাউন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল, পুলিশের হাতে গ্রেফতার পাঁচ্।

গত ২৮শে আগষ্ট ২০২২ রবিবার, বেলা দুই ঘটিকায়, ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে, জেলা পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেশ ব্রিফিং এ জানানো হয়,
গত ২৫ শে আগষ্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচ ঘটিকায় কানাইপুর বাজারের ঢাকা খুলনা মহাসড়কে বেশ কিছু লোক রামদা ছোড়া লাঠি সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে শো ডাউন করে।

এই শোডউনের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ত্রাসী খাজা বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া শিরোনামে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ভাইরাল হতে থাকে এবং তা জেলা পুলিশের নজরে আশে। পরবর্তীতে পুলিশ তৎক্ষণাৎ এ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে, ফরিদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাজাহান পিপিএম সেবা এর নির্দেশে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক এসপি আলিমুজ্জামান চলে যাওয়ার সাথে সাথেই, কানাইপুর এলাকায় সন্ত্রাসী খাজা বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া শিরোনামে একটি ভিডিও বিভিন্ন ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও, বিষয়টি ছিল কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণ।

কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসাইন ও কোতয়ালী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ সৌরভ মিলে একটি গ্রুপ অপর দিকে কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এএফ এম আসলাম এবং ছাত্রলীগের কর্মী সহ ওয়ার্ড ছাত্র লীগের পদপ্রার্থী সোহাগ শেখ মিলে আরেকটি গ্রুপ।

দুই গ্রুপের বিরোধকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ অন্তঃকোন্দল তৈরী হয়।আর শোডাউনের মাধ্যমে আসলাম ও সোহাগকে ভয় দেখানোর জন্য মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ স্থানীয় খাজা বাহিনীর সদস্য দিদার, শহীদ, সোহেল সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে শোডাউন করে।

এই শোডাউন এর উদ্দেশ্য ছিল কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আসলাম ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী সোহাগকে আক্রমণ করা, তাদের ভয়-ভীতি দেখানো এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করা।

পুলিশী তদন্ত চলাকালে কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এ.এফ.এম আসলাম, সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান খাজা সহ মোট এজাহারনামীয় ১৩ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে, বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হইয়া অবৈধ শক্তির মহড়া প্রদর্শন, জনমনে ভয়-ভীতি, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, তথা মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও বাড়িঘর ভাংচুর করার বিষয়ে কোতোয়ালী থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। কোতয়ালী থানার মামলা নং- ৭২, তারিখ-২৮/০৮/২০২২ খ্রিঃ

ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির গ্রুপের সাথে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী সোহাগ গ্রুপের বিরোধ প্রকট আকার ধারণ করে।

হুমকি ধামকি এবং গালিগালাজ এক সময় চরম আকার রূপ নেয় যার ফলশ্রুতিতে শোডাউনের মাধ্যমে অপর গ্রুপকে ভয় দেখানোর জন্য রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র সহ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শোডাউন দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয় সাব্বিরের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ।

আরও পড়ুনঃ কানাইপুরে ব্যবসায়ীক দোকানে আগুন – সময়ের খরব/somoyer khbor

চাঞ্চল্যকর বিষয়টির তদন্তে ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে পাঁচ জনকে সুনির্দিষ্ট ভাবে শোডাউনের অগ্রভাগে থাকা রামদা বা ছেনদা হাতের ০৩ জন, সাগর বেপারী, নাজমুল,ও রাকিব এবং লোহার রড হাতে থাকা তুষার সহ শোডাউনের অন্যতম আয়োজক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির কে আসামি সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ শাজাহান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার সহ ফরিদপুরের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক বৃন্দ।

নবাগত পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ শাজাহান পিপিএম জানান, সন্ত্রাসের প্রতি জিরো টলারেন্স অবস্থানকে সমুন্নত রেখে এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কঠোর অভিযান চলমান আছে ।

ফরিদপুর শহরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য কাউকে ন্যূনতম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ফরিদপুর শহরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকল অভিযান চলমান থাকবে এবং আরো বেগবান করা হবে। সন্ত্রাসীদের ফরিদপুরের মাটিতে কোন জায়গা দেয়া হবে না।

Exit mobile version