ফরিদপুরের আলোচিত আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে নবজাতকের কপাল কাটার ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্বপ্রণোদিত হয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ আদায়ের লক্ষ্যে অভিযোগ নিয়েছেন কমিশন।
এর আগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এর জের ধরে আগামী ৪ এপ্রিল কমিশনের ভার্চুয়াল কোর্টে উপস্থিত হওয়ার জন্য আল মদিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি নোটিশ জারি করেছে কমিশন। বুধবার এ নোটিশ জারি করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
নোটিশে বলা হয়েছে, কেন হাসপাতালের পক্ষ থেকে ভিকটিমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা ব্যাখ্যা করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কমিশনের ভার্চুয়াল শুনানিতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া এ শুনানিতে ভিকটিমের প্রতিনিধিকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে একই ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের আদালতে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি মামলা করে ভুক্তভোগী পরিবার। সে মামলায় আসামি করা হয়- আল মদিনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকারিয়া মোল্লা পলাশ, পরিচালক মো. আল হেলাল মোল্লা টগর, মো. গোলাম কিবরিয়া রাসেল, রহিমা রহমান, মো. আরিফুজ্জামান সবুজ ও হাসপাতালটির আয়া চায়না আক্তারকে।
এদিকে নবজাতকের বাবা শফি খান বলেন, ‘আমার প্রথম বাচ্চা নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। যে স্বপ্নটা ওরা নষ্ট করে দিয়েছে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ হাসপাতালটি স্থাপিত হয় ২০০৭ সালে। ২০১৫ সাল থেকে এ হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।
গত ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দক্ষিণ ময়েজউদ্দিন মণ্ডলপাড়া গ্রামের শফিক খানের স্ত্রী রুপা বেগমকে (২০) সন্তান প্রসবের জন্য ওই হাসপাতালে আনা হয়। সন্তান প্রসবকালে ওই হাসপাতালের নার্স দাবি করা আয়া চায়না বেগম সিজার করলে, নবজাতকের কপালের বাম ভ্রুর ওপরে কিছু অংশ কেটে যায়। পরে নয়টি সেলাই দেওয়া হয়। এ ঘটনা সারাদেশে আলোচিত হয়। পরে ওই দিনই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়।