ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কৃষ্ণারডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ইংরেজি বিষয় পড়ানো হচ্ছিল। সত্তরোর্ধ্ব শিক্ষক যখন শ্রেণীকক্ষে পড়াচ্ছিলেন, তখন প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী পাঠে মন্ত্রমুগ্ধ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের নিয়মিত কোনো শিক্ষক নন, যিনি ওই শ্রেণিতে পাঠদান করতেন, তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. এম এ সাত্তার মন্ডল। যেহেতু তিনি নিজেও এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তাই বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নিবেদিত।
ডাঃ সাত্তার একই উপজেলার উত্তর গুপীনাথপুর গ্রামের গফুর মন্ডলের বড় ছেলে। তিনি কৃষ্ণডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তারপর নিজেকে নিয়ে গেলেন অনন্য উচ্চতায়। তিনি শুধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদই অলংকৃত করেননি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ইমেরিটাস অধ্যাপক।
বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদকে সরকার একুশে পদকে ভূষিত করেছে। এখন অবসরে শৈশবের স্কুলে সময় কাটাচ্ছেন। নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয় পড়ান।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ মোল্লা বলেন, ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সাত্তার এই বিদ্যালয়ের গর্ব।
আমরা খুব খুশি যে তিনি এখন শিক্ষকতায় ফিরে এসেছেন। শিক্ষার্থীরাও উৎসাহ পাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র শাহাদাত হোসেন বলেন, সাত্তার স্যার খুব ভালো পড়ান। আমি তার পড়া খুব সহজেই বুঝতে পারি। তিনি অত্যন্ত দয়ালু মনের মানুষ।
তিনি আমাদের খুব ভালোবাসেন। আমরা আশা করি তার মতো উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মঈনুল হক বলেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত কৃষি অর্থনীতিবিদ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ও দেশের অন্যতম শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যের মতো ব্যক্তিত্বরা এভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন, এটা সবাইকে উৎসাহিত করেছে। শিকড়ের প্রতি তার টান প্রতিফলিত করে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
Pingback: ফরিদপুরে দেবরের হাতে ভাবি খুন