ফরিদপুরে অপারেশনে রোগীর মৃত্যু, ক্লিনিক বন্ধ করে পালালো মালিক ও চিকিৎসক, নাকের পলিপাস অপারেশন করতে গিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার উপজেলার দেশ জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর হাসপাতালটি বন্ধ করে পালিয়েছে চিকিৎসক, নার্সসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী।
নির্ভর সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গা বাজারের সিটি টাওয়ারের তিন তলায় অবস্থিত ওই প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক মামুন চোকদার। এর আগেও সেখানে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীর মৃত্যৃর খবর পাওয়া যায়। সর্বশেষ শনিবার ভোরে সেখানে রুহুল আমিন (৩০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হলো। রুহুল ভাঙ্গা উপজেলার ত্রিপাগদী এলাকার আব্দুর রব মাতুব্বরের ছেলে।
রুহুল আমিনের বোনাই মো: নাঈম মোল্যা জানান, নাকে পলিপাস অপারেশন করাতে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে দেশ প্রাইভেট হাসপাতালে আনা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার অপারেশন হওয়ার কথা থাকলেও তাকে ওটিতে নেয়া হয় রাত ১১টার দিকে। ডা. মারুফ শাহরিয়ার তার অপারেশন করেন।
নাঈম জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওটি থেকে বের করা হয় রুহুল আমিনকে। এ সময় রুহুল জানান, তার মাথায় প্রচণ্ড ব্যাথা হচ্ছে। এর সাড়ে চার ঘণ্টা পর ভোররাত ৫টার দিকে মারা যান তিনি।
এদিকে মৃত্যুর পরে রুহুলের লাশ ওই ক্লিনিক থেকে বের করে তাকে তাড়াতাড়ি ফরিদপুর নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। তবে তার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে স্বজনরা নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুনঃ সানজিদাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আইফোন দিলো বাফুফে
এ ঘটনার পর রুহুলের স্বজনেরা তার লাশ নিয়ে দেশ ক্লিনিকের সামনে ফুটপাতে বসে আহাজারি করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ক্লিনিক বন্ধ করে পালিয়ে যান ডাক্তার-নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অভিযুক্ত ডা. মারুফ শাহরিয়ারের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
ডা. মহসিন উদ্দিন ফকির (ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা) এ ব্যাপারে বলেন, ঘটনাটি মৌখিকভাবে আমি শুনেছি। তবে রোগীর স্বজনদের পক্ষ থেকে কেউ আমাকে মৌখিক কিংবা লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে সিভিল সার্জন স্যারের সাথে কথা বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জিয়ারুল ইসলাম বলেন, নাকের পলিপাস অপারেশন করতে গিয়ে রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর থেকে ক্লিনিকটি বন্ধ করে সবাই পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।