ফরিদপুরে প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ায় কলেজছাত্রীর আত্ম*হত্যা

ফরিদপুরে প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ায় কলেজছাত্রীর আত্ম*হত্যা। দিনমজুর বাবার স্বপ্ন ছিল তার একমাত্র মেয়ে রানী আক্তার মিম উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভালো একটা চাকরিতে যোগ দেবে। আর মায়ের স্বপ্ন ছিল যদি চাকরি নাও পায় তাহলে অন্তত ভালো একটা পাত্রের হাতে তুলে দিতে পারবে, যেন সারাজীবন সুখে থাকতে পারে। সেই স্বপ্নকে সাথে নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মেয়েকে মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন মা-বাবা। তবে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের আগেই প্রেমের ফাঁদে পড়ে আত্ম*হত্যার পথ বেছে নিলেন তাদের মেয়ে মিম। মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেল মা-বাবার স্বপ্ন।

আরও পড়ুনঃ টিসিবির পণ্য নিতে যাওয়ার পথে লা*শ হলেন কৃষক

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের দিমজুর আফছার মাতুব্বরের একমাত্র মেয়ে নি*হত রানী আক্তার মিম। তিনি স্থানীয় সালথা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে মুঠোফোনে ফোনে তার  প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া করে মিম তার ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্ম*হত্যা করে বলে তার পরিবারের দাবি। তবে প্রেমিকের নাম ও ঠিকানা সম্পর্কে কেউ কিছু জানেন না।

মিমের বাবা আফছার মাতুব্বর বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়ির পাশে একটি মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে যাই। মিলাদে যাওয়ার পর একটা ছেলে আমাকে ফোন করে বলে, আপনি তারাতারি বাড়িতে যান। বাড়ি গিয়ে দেখেন আপনার মেয়ের কী অবস্থা। আমি স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত বাড়িতে এসে দেখি আমার মেয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর থেকে ওই ছেলের ফোন বন্ধ। তবে তার ছবি রয়েছে আমার মেয়ের মোবাইলে। পুলিশ লা*শ উদ্ধার করে নেওয়ার সময় মেয়ের ফোনও নিয়ে গেছে। আমাদের ধারনা ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক ছিল।

আরও পড়ূনঃ ছেলে-বৌমা গ্রেপ্তার “মাকে ভরণপোষণ না দেওয়ায়”

ঘটনার আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের ঝগড়া হয়। পরে অভিমান করে আমার একমাত্র মেয়ে আত্ম*হত্যার পথ বেছে নেয়। আমি ওই ছেলের সন্ধান চাই। পাশিপাশি ওর বিচার চাই। আমি গরীব মানুষ। তারপরেও মেয়েটা নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। ওকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলাম।

মিমের মা মোছা. নাজমা বেগম বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এক ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার করছে। আরেক ছেলে ছোট। আর একমাত্র মেয়ে মিমকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমাদের। ওকে উচ্চশিক্ষা দিয়ে ভালো একটা চাকরি দিতে না পারলেও ভালো একটা চাকরিজীবী ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন আজ মাটির নিচে চলে গেল।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিমের বাবা-মা একটি মিলাদ মাহফিলে যান। বাড়িতে তাদের মেয়ে সালথা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মিম একা ছিল। মিমের সঙ্গে একটা ছেলের সম্পর্ক রয়েছে। রাতে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় বলে শুনেছি। পরে মিম ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্ম*হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমের লা*শ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ম*র্গে পাঠায়। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *