ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলায় স্ত্রীর তালাক দেয়ার খবর শুনে শ্বশুরবাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বিষ পান করে স্বামী আত্ম*হ*ত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। আত্ম*হ*ত্যাকারীর নাম নাজমুল মাতুব্বর। সে ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে।
গত মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বিষ পান করেন তিনি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। পরদিন (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃ*ত্যু হয়। পরে ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশ লা*শ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
আরও পড়ুনঃ ল্যাবের ফ্রিজে মিষ্টির প্যাকেট পাওয়ায় সিলগালা করলেন ইউএনও
প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের হাসমত শিকদারের মেয়ে মনিকার সাথে বিয়ে হয় নাজমুলের। বিয়ের পর নাজমুল তার শ্বশুরবাড়ি এবং নিজ এলাকায় বেশ কয়েকটি মেয়ের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর স্ত্রী ও উভয় পরিবারের লোকজন তাকে বোঝানোর পরও সে পরকীয়া চালিয়ে যেতে থাকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নাজমুলকে লিখিতভাবে তালাক নোটিশ পাঠায় মনিকা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিষের বোতল হাতে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বিষপান করেন নাজমুল। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করলে পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মা*রা যান।
নিহতের স্ত্রী মনিকা জানান, ৪ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশ কয়েকটি মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। আমি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে অনেকবার বোঝাতে পারিনি। আমি ডিভোর্স দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। ডিভোর্সের পর সে আমাকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলে, ‘তোমাকে দেখাবো আমি তোমার উঠোনে আত্ম*হত্যা করব।’ বিষয়টি আমি আমার পরিবার ও শ্বশুরবাড়িকে বলেছি। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের বাসায় এসে এই কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে নার্সিং হোস্টেলে ঝু;লন্ত অবস্থায় ছাত্রীর লা;শ উদ্ধার
এ বিষয়ে নাজমুলের বাবা ইলিয়াস মাতুব্বর বলেন, দুই পরিবারের মধ্যে এরই মধ্যে একাধিক আদালত-সালিশী হয়েছে। আমার ছেলে বিষ খেয়েছে শুনে তার চিকিৎসা করি। কিন্তু একদিন পর তার মৃ*ত্যু হয়।
চুমুরদী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসিম শিকদার মিলন জানান, নাজমুল ও মনিকার পরিবারের মধ্যে কয়েকবার সালিশ হয়। নাজমুল সব সময় উভয় পরিবারকে জিম্মি করে নিজের খুশি মতো বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করতো।