somoyerkhbor.com

বন্ধুকে খুনের অভিযোগে অপর বন্ধুর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

মোঃ সৈকত হাসান, ফরিদপুর

ফরিদপুর জেলা সদরের কৃষ্ণনগন ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত নিমাই শেখের পুত্র, কাচামাল ব্যবসাসী শরীফ শেখ (৩৫) কে, র্নিমম ভাবে হত্যার প্রতিবাদে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু খুনি শরীফ বাকাউলের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে ।রহিমপুর গ্রামবাসীর আয়োজনে গত ২২শে জুলাই-২০২২ শুক্রবার বেলা ৩ ঘটিকার সময় জেলার মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বোয়ালীয়া-সদরদী সড়কের বাঙ্গাবাড়ীয়া বাজারে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত মানববন্ধনে রহিমপুর গ্রামবাসী সহ আশেপাশের গ্রামের কয়েক শত মানুষ অংশ নেয়।মানবন্ধনে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বদরুল ইসলাম স্বপন, আবুল বাশার, মাজেদুল ইসলাম মজনু, হাফেজ বোরহান আনিস, মিজানুর রহমান, মৃত শরীফ শেখের মা, স্ত্রী, দুই সন্তান, বড় ভাই বাবলু সহ এলাকার আরো অনেকেই।

এ সময় সাবেক মেম্বার বদরুল ইসলাম স্বপন তার বক্তব্যে বলেন, শরীফ হত্যা কান্ড হলো, তিনটি ইউনিয়ন স্তব্দ হয়ে গেলো।এত বড় একটি হত্যাকান্ড হয়ে গেলো কিন্ত আমরা প্রশাসনের কোন কর্মকান্ড দেখছি না।কোন আসামী ধর-পাকর হচ্ছে না, প্রশাসনের কাছে যাচ্ছি, তারা বলতেছে আজ না কাল, এর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবেই, আমরা বার বারই তাদের অপেক্ষায় বসে আছি, কেনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না এর কোন উত্তর পাচ্ছি না। জানতে পেরেছি খুনি শরীফ বাকাউল পুলিশের কাছে সিকার করছে, শরীফ শেখ তার মাকে নাকি গালি দিয়েছিলো, এর জন্য সে কানাইপুর থেকে লোহার দা কিনে এনে তাকে মেরে ফেলেছে। সারা ইউনিয়ন বাসীর প্রশ্ন, একা কিভাবে একজন মানুষ আরেক জন মানুষ কে মেরে ফেলে, নিশ্চয় এই খুনের সাথে আরো অনেকেই জরিত রয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবী, তদন্ত করে জরীতদের খুজে বের করে গ্রেফতার করা হোক।

আরেক বক্তা বলেন, তার মাকে গালী দেয়ায় এই খুন করা হয়েছে এটা বিশ্বাস যোগ্য নয়, শরীফ শেখ ছিলেন কাচামাল সহ গরুর ব্যবসায়ী, তার কাছে প্রায় সময়ই কম বেশি টাকা থাকতো, শুনতে পেয়েছি হত্যার দিন ও টাকা ছিলো, এছারাও শরীফ শেখ, শরীফ বাকাউলের নিকট ১ লক্ষের উপরে টাকা পেতো, আমরা মনে করি, এই টাকা দেয়া নেয়াকে কেন্দ্র করেই হত্যা কান্ড করা হয়েছে। আমরা এই খুনি বাকাউলের ফাসি চাই।

শরীফ শেখের মা, স্ত্রী, বড় ভাই ও দুই সন্তান সবাই এই খুনের সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আসামীদের গ্রেফতার ও ফাসীর দাবী জানিয়েছে। মানববন্ধন শেষে সবাই বিক্ষোভ মিছিল করে,মিছিলটি বাঙ্গাবাড়ীয়া বাজার প্রদক্ষন করে শেষ হয়। মিছিলে সবাই একটা দাবী নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে, ফাসি চাই ফাসি চাই, শরীফ বাকাউল এর ফাসী চাই।

 

উল্লেখ্ এই যে, গত ২৬ জুন-২০২২ তারিখে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গাবীরবীলের একটি কলাবাগান থেকে কাচামাল ব্যবসায়ী শরীফ শেখের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।ওই ঘটনায় কোতয়ালী থানায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ।

এর পর গত বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জামাল পাশা জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও তদন্ত কর্মকর্তার তদন্তের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ, সদরের রহিমপুর মধ্যপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে শরীফ বাকাউলকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরেই সে পুলিশের কাছে শরীফ শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

তিনি আরো জানান, তারা দু’জনই পরস্পর বন্ধু ছিল। গ্রেফতারকৃত শরীফ বাকাউলের কাছে নিহত শরীফ শেখ ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। মূলত এই টাকা নিয়ে দুই জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরই জেরে শরীফ বাকাউল বন্ধু শরীফ শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

 

পুলিশের দেয়া তথ্য বলছে, গত ২৫ জুন তাস খেলার কথা বলে নিহত শরীফ শেখকে ডেকে নিয়ে যায় আসামি শরীফ বাকাউল। পরে পেছন থেকে দা দিয়ে মাথায় এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে আসামি শরীফ। হত্যার পর সে হত্যায় ব্যবহৃত দা, রক্ত মাখা জামা কাপড় কাদা মাটির গর্তে চাপা দেয় এবং নিহতের মোবাইল ফোন কুমার নদের পানিতে ফেলে দেয়। পুলিশ আসামি শরীফের দেখানো জায়গা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দা, রক্তমাখা জামাকাপড় উদ্ধার করেছে। পানির গভীরতা বেশি থাকায় নিহতের মোবাইলে ফোন সেই সময় উদ্ধার উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও পরে তা উদ্ধার করা হয়েছে।

Exit mobile version