ছেলেটি মেলায় এসেছিল মায়ের সাথে। মেলায় তার একটি গাড়ি পছন্দ হয়। কিন্তু তার মায়ের কাছে কোনো টাকা অবশিষ্ট ছিল না।
আমি প্রথম দেখি- একটি ছেলে হাত-পা ছুঁড়ে কান্নাকাটি করছে!
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বুঝলাম, ঘটনা কী?
কোনোভাবেই তাকে বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছিলাম আর ভাবছিলাম, “ছেলেটা আমার ভাগিনা হতে পারত, ভাতিজা হতে পারত, আমার ছেলে হতে পারত অথবা ছোটবেলাকার আমি হতে পারতাম!”
পরে একজনকে ডেকে বললাম, আমি যদি ওর মাকে টাকা দিই, তাহলে নিবে কি না?
এতক্ষণ যে অটো ড্রাইভার ছেলেটিকে টেনেটুনে অটোরিকশায় তোলার চেষ্টা করছিল, সে-ই লোকটিকে জানানো হল।
এরপর ছেলেটির মা এল। ছেলেটির ডান হাতে টাকা গুঁজে দিলাম। এরপর তারা আবার মেলায় গেল।
আমি অপেক্ষা করছিলাম, মেলাফেরত ছেলেটির হাসিমুখ দেখার জন্য।
প্রথম সময়ে একবার ফিরে আসার উদ্যোগও নিয়েছিলাম। কিন্তু ভাবলাম, রাতে আমার ঘুম নাও আসতে পারে। একটি অনন্ত অপরাধবোধ তাড়া করতে পারে। হয়তো আমার কিছু করা উচিত।
কিছুক্ষণ পরে ছেলেটা গাড়ি কিনে ফিরে এল। মা-ছেলে দু’জনের মুখেই হাসি!
শুনলাম, সে মাদ্রাসায় পড়ে। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে আসে বলে এবার স্কুলে দেয়া হয়েছিলো। ওর মায়ের হাতে আমার কার্ড দিয়ে বললাম, ‘এরপর ওর কিছু দরকার হলে আমাকে জানাবেন!’
দানের টাকায় দান না করে, দায়বদ্ধতা থেকেও দান করা যায়। সেটা যে উদ্দেশ্যেই হোক। লক্ষ্য তো একই- ঐ হাসিমুখ!
ধর্ম তো যার যার কিন্তু উৎসব যে সবার!
.
লেখাঃ Ahasan U Rubel