somoyerkhbor.com

‘বাবা আমি আটকা পড়েছি, আমাকে বাঁচাও’ মৃত্যুর আগে লামিসা

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে সবাই যখন পালিয়ে যাচ্ছিল তখন বুয়েটের ছাত্রী লামিসা তার বাবাকে কল দিয়ে বলে- ‘বাবা, আমি আটকে গেছি, আমাকে বাঁচান।’ এরপর আর কথা বলা যায়নি লামিসার সাথে। আগুন থেকে বাঁচানো যায়নি। মেয়ের আকুতির সামনে মেয়েকে হারিয়েছেন অসহায় বাবা।

শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে লামিসার চাচা রফিকুল ইসলাম সুমনকে তার এ আকুতির কথা জানান।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে লামিসা তার বান্ধবীদের সঙ্গে বইমেলা ঘুরে গিয়ে বিরিয়ানি খেতে যায়। আগুন জ্বলে উঠলে লামিসা তার বাবাকে কল দিয়ে বলে, “বাবা, আমি আটকা পড়েছি, আমাকে বাঁচাও।” একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও লামিসার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, লামিসা ছোটবেলা থেকেই খুব শান্তশিষ্ট মেয়ে। তার মা মারা গেছেন ৬ বছর আগে। বড় বোন হিসেবে লামিসা সবার খেয়াল রাখতেন। ওর এভাবে চলে যাওয়া আমি মেনে নিতে পারছি না।

ভিকারুননেসা থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস থেকে এইচএসসি পাস করার পর লামিসা বুয়েটে ভর্তি হন। সে মেকানিক্যাল বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত। দুই বোনের মধ্যে লামিসা বড়। ছোট বোন রাইসা এ বছর ভিকারুননেসা কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

লামিসার বাবার নাম নাসিরুল ইসলাম শামীম। তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে হেডকোয়ার্টার আরএন্ডসিপিতে কর্মরত আছেন। লামিসার মা আফরিনা মাহমুদ মিতু ২০১৮ সালে মারা যান। নাসিরুল ইসলাম তার দুই মেয়েকে নিয়ে ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে থাকতেন।

এদিকে লামিসার নিজ গ্রাম ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিতে শোকের মাতম। শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নগরীর দক্ষিণ ঝিলটুলিস্থ নিজ বাড়িতে তার মরদেহ আনা হয়। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। বাদ জুম্মায় চকবাজার জামে মসজিদে জানাজা শেষে আলীপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নামাজে জানাজায় অংশ নেন ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একে আজাদ, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলীমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: ইশতিয়াক আরিফ, প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা

Exit mobile version