TVS Apache RTR 160 4v DD বাইকের ভালো-খারাপ দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিনঃ

 

আমি বেশ কয়েকমাস যাবত TVS Apache RTR 160 4v DD ব্যবহার করছি।
আজ আপনাদের কাছে ৫০০০কিমি রাইড রিভিউ তুলে ধরবো।
চেষ্টা করবো মোটরবাইকটির খুঁটিনাটি ভালো খারাপ দিকগুলো তুলে ধরার।

(বি.দ্র. সম্পূর্ণটাই আমার ইউজার এক্সপিরিয়েন্স ও ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা। কোন এক্সপার্ট রিভিউ নয়।)

◾পাওয়ার: 16.27BHP ও 14.8Nm টর্ক সম্বলিত ১৬০সিসি অয়েল কুল্ড ইঞ্জিনটি নিঃসন্দেহে সেগমেন্টের সবচাইতে পাওয়ারফুল ইঞ্জিন। কুইক এক্সিলারেশন আর টপ স্পিডের দিক দিয়ে বাইকটি অনেক এগিয়ে।
অয়েল কুল ইঞ্জিনের কারণে পাওয়ার লস কম হয়, হিট কম হয় ও হাইওয়ে রাইডে ভালো পারফরমেন্স পাওয়া যায়।

◾বিল্ড কোয়ালিটি: ব্যক্তিগতভাবে বাইকটার বিল্ড কোয়ালিটি বেশ ভালো লেগেছে। বেশ শক্তপোক্ত ও মজবুত। প্লাস্টিক পার্টগুলো প্রিমিয়াম ফিল দিয়েছে।

◾হ্যান্ডলিং: আপরাইট পজিশনের পাইপ হ্যান্ডেলবার থাকায় হ্যান্ডলিং বা কন্ট্রোলিং বেশ আরামের। স্মুথ রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স পাওয়া যায়। আর আগের RTR 2v তে যে স্কিডিং প্রবলেম ছিলো সেটা এটাতে নাই বললেই চলে। তবে ভীড়ের মধ্যে চালাতে কিছুটা কষ্ট হয় আর টার্নিং রেডিয়াস বেশি হওয়ায় ঘুরতে বেশ জায়গা লাগে।

◾ওজন: বাইকটির ওজন ১৪৩ কেজি ও সিট হাইট ৮০০মিমি হওয়ায় হালকাপাতলা ওজনের ও ৫’৬” এর কম উচ্চতা সম্পন্ন লোকদের জন্য এটাকে বশে রাখা বেশ কঠিন হবে। ওজনটা ৭/৮ কেজি কম হলে বেশ ভালো হতো।

◾কমফোর্ট: ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে বাইকটা সেগমেন্টের সেরা কমফোর্টেবল মনে হয়েছে। টানা কয়েকশো কিলো চালিয়েও ব্যাকপেইন অনুভব করিনি। লং রাইডের সাথে সাথে সিটি রাইডেও বেশ কমফোর্টেবল। গিয়ার শিফটিং বেশ স্মুথ। উচ্চ গতিতে লিন হয়ে টার্ন করতে বেশ মজা পাবেন। পেছনের Showa মনোশক্সটাও বেশ কাজের মনে হয়েছে। ভাঙাচোরা রাস্তায় বাইক বেশ কমফোর্টেবল ও স্ট্যাবল ছিলো।

◾স্ট্যাবিলিটি: বাইকটা বেশ স্ট্যাবল। হাইওয়েতে উচ্চ গতিতেও তেমন ভাইব্রেশন থাকে না। ৮০০০ আরপিএম ক্রস করলে ফুটপেগ ও হ্যান্ডেলবারে সামান্য ভাইব্রেশন ফিল করেছি। মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ১৩০কিমি/ঘন্টা গতিতেও বেশ স্ট্যাবল ছিলো।

◾ব্রেকিং: পূর্বের RTR 150/160 2v এর চাইতে ব্রেকিং বেশ উন্নত। অনেক হার্ড ব্রেক করলেও স্কিড করে না। তবে বৃষ্টির সময় ডিস্কের পারফরমেন্স কিছুটা খারাপ হয়ে যায়। ভেজা রাস্তায় ব্রেকিংটা সন্তোষজনক নয়। Fz v2 বা Old Gixxer এর তুলনায় ব্রেকিং ১৮/২০ বলা যায়। তবে লোকে এইটার ব্রেকিং সম্পর্কে যেমন যতটা খারাপ মন্তব্য করে বাস্তবে কোনভাবেই এমন নয়।

◾লুকস: এটা যদিও ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম তবুও নিজের মতটা দিই। আমার কাছে বাইকটা দেখতে বেশ এগ্রেসিভ লাগে। অনেকে লুকের দিক দিয়ে এই সেগমেন্টে NS কে এগিয়ে রাখলেও আমি Fz v2 কে এগিয়ে রাখবো। আর দ্বিতীয়তে থাকবে 4v

◾মাইলেজ: এই পয়েন্টে এসে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। আপনি হুটহাট গতি উঠাতে চাইবেন; কুইক এক্সিলারেশনের মাধ্যমে সবার আগে থাকতে চাইবেন কিন্তু মাইলেজ চাইবেন TVS metro কিংবা Platina এর মতো তা তো আর হয় না। এটির পাওয়ার অনুযায়ী মাইলেজ অনেক ভালো মনে হয় আমার কাছে। আমি অনেক রাফ রাইড করেও সিটিতে ৩৭ এর কম পাইনি। আবার ডিসেন্ট রাইড করে ট্রাফিকের মধ্যেও ৪৩ পেয়েছি। এমনিতে এখন পর্যন্ত সিটিতে সর্বমোট এভারেজ ৩৯ পেয়েছি। হাইওয়েতে ৪৬+ পাওয়া যায় ইজিলি। ভালো মাইলেজের জন্য ভালো পাম্পের ফুয়েল, সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, পারফেক্ট গিয়ার শিফটিং ও থ্রটল কম মোচড়ানোই যথেষ্ট। ডিসেন্ট রাইড করলে সিটিতেই ৪০+ মাইলেজ পাবেন আশা করি।

How to use lemon juice to get rid of acne?

◾আফটার সেলস সার্ভিস: TVS এর সার্ভিস সেন্টারের সার্ভিস Yamaha এর মতো নয়। সে আশা করাটাও বোকামি। বিভিন্ন জায়গার সার্ভিস সেন্টারে বিভিন্ন রকম ফিডব্যাক পেয়েছি। তবে ফেসবুকে TVS Sales Point এর সার্ভিস সেন্টারের বেশ সুনাম দেখেছি। ঢাকার বাইরে থাকায় তাদের থেকে সার্ভিস নেওয়ার সুযোগ মিলেনি।

৫৫০০ কিমি চালানোর মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনরকম কোন সমস্যা পাইনি ও কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি। শুধু সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল ও অয়েল ফিল্টার বদলেছি আর এয়ার ফিল্টার ক্লিন করে রেখেছি। TVS Tru4 ইঞ্জিন অয়েলের ফিডব্যাক মোটামুটি ছিলো। Motul full synthetic দিয়ে বেশ ভালো রেজাল্ট পেয়েছি। খাদক ইঞ্জিনটায় ১২০০মিলি ফুল সিনথেটিক অয়েল দেওয়া লাগে। (যদিও বিষয়টা ঠিক আছে তবুও আমার কাছে পেইনফুল)
বাইকটার এক্সস্ট নোটটা আমার কাছে সেইইই লাগে। গুরুগম্ভীর টোনটা শুনতে বেশ। রেভ করলে এগ্রেসিভ সাউন্ডটা তো পুরা মাথা নষ্ট করে দেয়।
লং ট্যুরে ভালো মজা লেগেছে। ওভারটেকের সময় বেশ কনফিডেন্ট ছিলাম। হাইওয়ের যতোরকমের যতো খেলোয়াড় আছে সবাইকে বেশ সহজেই খেলে দিয়েছি! হাইওয়ে রাইডে পাওয়ার, কন্ট্রোল, কমফোর্ট, মাইলেজ বেশ ভালো ছিলো। টানা অনেক বেশি চালালেও বাইকের সেই ধকল নেওয়ার ক্ষমতা আছে। তবে নাইট রাইডের সময় হেডলাইট নিয়ে বেশ প্যারা খাইছি। হেডলাইটের আলোটা একেবারেই অপর্যাপ্ত। বিপরীত পাশ থেকে কোন গাড়ি আসলে এটার আলোয় কিছুই দেখা যায় না। রিয়ার ভিউ মিরর জোড়া দুই পাশে বেশি ছড়ানো থাকায় জ্যামের মধ্যে মিররেই আটকে যায়। সাইড স্ট্যান্ডটা ছোট বিধায় গাড়িটা বেশি হেলে পরে আর মাটি এর দানবীয় ওজন ধরে রাখতে না পারায় আমার বাইকটা দুইবার হেলে পরে গেছে।
আরেকটা বড় সমস্যা টায়ার গ্রিপ। TVS Remora টায়ার আগের 2v থেকে কিছুটা ভালো করলেও এখনো তেমন ভালো নয়। মসৃণ তলে বেশ ভালো ফিডব্যাক দিলেও ভেজা কিংবা অমসৃণ তলের পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো নয়। এছাড়া বাইক ঘোরাতে গেলে জান বেরিয়ে যায়। (টার্নিং রেডিয়াসের কারণে) আমার উচ্চতা ৫’৫” হলেও মানিয়ে নেওয়ায় তেমন একটা সমস্যাবোধ করিনি। তবে ৫’৬” এর নিচে নতুন রাইডারদের জন্য বাইকটা না নেওয়াই ভালো। সামনের মাডগার্ড এতোটাই বাজে যে রেডিয়েটর পর্যন্ত কাদা ছিটে। পেছনের মাডগার্ডও খুব একটা ভালো না।

Take a look at the benefits of Amalki-

◾ পজেটিভ দিকসমূহ:

১. সেগমেন্টের সেরা কুইক এক্সিলারেশন ও টপ স্পিড।
২. এগ্রেসিভ লুকস
৩. অয়েল কুল ইঞ্জিন
৪. বিল্ড কোয়ালিটি
৫. স্মুথ রাইড এক্সপিরিয়েন্স
৬. স্ট্যাবিলিটি
৭. কমফোর্ট
৮. কন্ট্রোলিং/হ্যান্ডলিং

◾নেগেটিভ দিকসমূহ:

১. টায়ার গ্রিপ আপ টু দ্যা মার্ক নয়
২. টার্নিং রেডিয়াস অনেক বেশি
৩. ওজন বেশি
৪. হেডলাইটের                                                                                  

রিবিউ করেছেনঃ সালমান রহমান পিয়াল

0 thoughts on “TVS Apache RTR 160 4v DD বাইকের ভালো-খারাপ দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিনঃ”

  1. Pingback: ইঞ্জিন ভালো রাখবে এমন কাজ গুলো করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top