লেবু-পানির যত উপকারিতা। লেবুতে রয়েছে হাজারও গুণাবলি। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ নানা রোগ উপশমে ও শরীরের উপকারী উপাদান হিসেবে লেবু ব্যবহার করে আসছে। বর্তমান সময়েও বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে আসলেই লেবুতে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ। ১০০ গ্রাম পাতিলেবু বা কাগজিলেবু থেকে পুষ্টি উপাদান হিসেবে পাওয়া যায় (ভিটামিন সি ৬৩ মিলিগ্রাম) যা আপেলের ৩২ গুণ ও আঙুরের প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়াও আরও পাওয়া যায় ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি শূন্য দশমিক ১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, লৌহ শূন্য দশমিক ৩ মিলিগ্রাম ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ পেটের অতিরিক্ত ভুড়ি/চর্বি মুক্তির উপায়.!
লেবু ব্যবহারের রয়েছে নানাবিধ উপায়। লেবু নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি নানা ধরনের রোগ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। লেবুর সাথে পানি মিশিয়ে ব্যবহারের রয়েছে আরও অনেক উপকারিতা। লেবুপানি যে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার হয় তার বিষয়ে নিন্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন-
লেবু-পানির যত উপকারিতা-
০১. ওজন কমাতেঃ যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও পারছেন না তারা লেবুপানি খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ওজন কমাতে পারেন। এজন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানির মধ্যে দুই চা চামচ খাঁটি মধু ও একটা লেবুর সম্পূর্ন রস দিয়ে মিশিয়ে প্রতিদিন গ্রহণ করুন। এভাবে নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে কিছুদিন পর থেকেই এর রেজাল্ট দেখতে পারবেন।
০২. অতিরিক্ত কোলেস্টরেল কমাতেঃ আমাদের শরীরে যাদের অতিরিক্ত চর্বি রয়েছে অর্থ্যাৎ খারাপ যে চর্বি রয়েছে তা ভ্যানিস করতে সাহয্য করে। এই চর্বির আরেক নাম এলডিএল। হার্ট অ্যাটাক, হার্টের ব্লক সৃষ্টি হয় এই চর্বির কারণে। এই বিষাক্ত চর্বি ভ্যানিস করতে লেবুপানি গ্রহণ করতে পারেন।
০৩. লিভারের চর্বি কাটাতেঃ অনেকেই যারা আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন তাদের দেখা যায় লিভেরে অতিরিক্ত চর্বি জমে আছে। যারা লিভারের জমে থাকা চর্বিকে কমিয়ে একটি সুস্থ্য-সবল ও সতেজ লিভার পেতে চান তারা নিয়মিত ১ গ্লাস লেবুপানি গ্রহণ করতে পারেন।
০৪. ক্যান্সার প্রতিরোধকঃ লেবুপানির এন্টি কার্সোনোজিক ইফেক্ট আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আবার কিছু কিছু ক্যান্সারের সেলকে ধ্বংসে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে লেবু পানি যেমন- গলার ক্যান্সার, লাঞ্চ বা ফুসফুসের ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার এইসকল ক্যান্সারের জীবাণু সরাসরি ধ্বংস করে লেবু পানি।
০৫. তারুণ্য ধরে রাখেঃ যারা তাদের তারুণ্য ধরে রাখতে চান তারা লেবুপানি গ্রহণ করতে পারেন। লেবুপানি ত্বকের বা চামড়ার যে টক্সিক পদার্থ রয়েছে তা পরিষ্কার করে। এতে আপনার স্কিন গ্লো করবে ও আরও তরুণ দেখাবে।
আরও পড়ুনঃ মানবদেহে যে স্থানে ফ্যাট জমে ও অতিরিক্ত ফ্যাট থেকে মুক্তির উপায়!
০৬. ভিটামিন সিঃ আমরা অনেকেই জানি লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি মানুষের জন্য খুবই উপকারী ভিটামিন। লেবুপানির মাধ্যমে কারও দাঁত থেকে রক্ত পড়া রোধ করতে পারে, যাদের শরীরের কোথাও ঘা হলে দেরিতে শুকায় তাদের দ্রুত ঘা শুকাতে সাহয্য করে, হাড় মজবুত করতে সাহয্য করে, যাদের পাইলসের সমস্যা রয়েছে তাদেরকেও লেবুপানি ব্যবহারের ফলে পাইলসের সমস্যাও দূর করতে পারে লেবুপানি।
০৭. কিডনির পাথর থেকে মুক্তিঃ যাদের কিডনিতে পাথর জমেছে তাদের সেই পাথর জমা থেকে মুক্তির জন্য লেবুপানি বা লেবুর রস দারুণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত লেবুপানি খেলে কিডনির পাথর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডাঃ কামরুল হাসান নোবেল (এমবিবিএস, বিসিএস)
মেডিকেল অফিসার, নীলফামারী।
Pingback: রোজায় শসা খাওয়ার উপকারিতা