বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশকে জঙ্গিবাদে পরিণত করবে: হানিফ

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তাই বিএনপি সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে হানিফ এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমান সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের জনক। তিনি এখন বিএনপির শীর্ষ নেতা। দুর্নীতি, জঙ্গিবাদের কারণে মানুষ তাদের আত্মগোপনে ফেলে দিয়েছে। তারা আবার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ হবে তালেবান, জঙ্গিবাদের দেশ।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাই, জেএমবিসহ জঙ্গিদের প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের প্রজননক্ষেত্রে পরিণত করে। বিএনপি নেতারা দেশকে সেই পথে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশের মানুষ ব্যর্থ রাষ্ট্রে ফিরে যেতে চায় না, জঙ্গিবাদ দেখতে চায় না।

ঢাকার আদালত এলাকা থেকে দুই জঙ্গি অপহরণের ঘটনায় দারুণ খুশি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ঘটনা নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব ড. এই ঘটনায় তিনি খুবই খুশি। কারণ জঙ্গিবাদ বিএনপি সৃষ্টি করেছে।

হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তারেক রহমান হাওয়া ভবনে বসে ১২৫টি ছোট-বড় জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলেন। এটা আমার কথা নয়; ২০০৬ সালে বিবিসি অনলাইন রিপোর্ট করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ১২৫টি জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। জঙ্গি নেতাদের অনেকেই হাওয়া ভবন নেতা তারিক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকার করেছেন। তার সহায়তায় তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারকে রহমান এখন বিএনপির আদর্শিক নেতা। যে তারেক রহমান হত্যা ও দুর্নীতির দায়ে সাজা পেয়ে পলাতক। বাংলাদেশে হত্যা, জঙ্গিবাদসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। দুর্নীতির দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালে হাওয়া ভবনে বসে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি স্রোত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। ৭১-এর পরাজিত শক্তি এবং ৭৫-এর খুনি বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে এসেছেন। বিশ্বের দরবারে চরম ব্যর্থ রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ঠিক তখনই দেশকে পিছিয়ে নিতে আবারো নিষ্ক্রিয়তা শুরু করেছে বিএনপি-জামায়াত।

হানিফ বলেন, বিএনপির জনসভায় কয়েকজন কর্মী অংশ নিয়েছেন। যা দেখে বিএনপি নেতারা মনে করছেন, তারা রাজ্যে ক্ষমতায় আসছেন। পরিষ্কার করে বলা যায়, আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচিত সরকার। বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আন্দোলন করে এই সরকারকে পতন করা যাবে না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা নির্বাচনের কথা বলছেন তাদের প্রতি আহ্বান- জনপ্রিয়তা আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে নির্বাচনে অংশ নিন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। সংবিধানের মধ্যে থেকেই নির্বাচন হতে হবে। অসাংবিধানিক দাবি নিয়ে নির্বাচনের বাইরে থাকলে দেশের জনগণ দায় নেবে না। নির্বাচন এলে প্রমাণ হবে জনগণ কার সঙ্গে যাবে।

হানিফ বলেন, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার প্রতি দেশের ৭২ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষের আস্থা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি বা এমন কোনো অপশক্তি নেই যে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাবে। মানুষ শান্তির পক্ষে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

আরও পড়ুনঃ ছবি প্রকাশ দুই জঙ্গির, ২০ লাখ ধরিয়ে দিলেই

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম।

এছাড়া বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ। সম্মেলন. সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *