ফরিদপুরের সদরপুর থেকে হাসি বেগম নামে এক গৃহবধূ গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলায় এক নারীর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। তার মা লাশটি হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন। পরে হাসি বেগমের পরিবার লাশ দাফন করে। দাফনের পাঁচ দিন পর হাসি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে আটক করে সদরপুরে নিয়ে আসে। হাসি বেগম সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৈলডুবি গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুুরে ৫ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের কর্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মৃত শাহ আলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে হাসি বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সাত বছরের একটি ছেলে রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কথা বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
হাসি বেগমের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় অভিযোগ করেন।জামাই মোতালেব শেখ তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। দুদিন পর ১৪ সেপ্টেম্বর হাসি বেগমের স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, হাসি বেগম নগদ টাকা ও প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে যায়।
এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার কচুরিপানা ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম লাশটি হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ শৈলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে অভিযোগ ও পালটা অভিযোগের মধ্যে হাসি বেগম তার বাবা-মাকে ২৩শে সেপ্টেম্বর ফোন করে জানান, তিনি বেঁচে আছেন। এরপর সোমবার ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে উদ্ধার করে সদরপুর থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খবির মোল্যা বলেন, এমন খবর শুনেছি। কিন্তু ঘটনাটা আমার পাশের ওয়ার্ডের।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
জেলা পরিষদের সদস্য এখলাছ আলী বলেন, এমন ঘটনা মানুষের মুখে মুখে শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানতে পারিনি।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মামুন আল রশিদ জানান, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি থানায় রয়েছেন। এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। ঘটনার সঙ্গে ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার পুলিশ জড়িত। ফলে সব তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
0 Comments on “ফরিদপুরের সদরপুরে দাফনের পাঁচ দিন পর জীবিত গৃহবধূ উদ্ধার”