আমাদের যাদের বাইক আছে এবং আমরা দৈনন্দিন জীবনে যারা বাইক রাইড করি তাদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স অনেক গুরুত্বপুর্ন বিষয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে নবায়ন (Re-New) করবেন? মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা দেশের আইনে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। আমাদের যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে তাদের সকলের একটি লাইসেন্স করা আছে যার মেয়দ নির্দিষ্ট। আমরা জানি যে , বাংলাদেশের সড়ক আইন অনুযায়ী মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ সাধারণত ১০ বছর। এই ১০ বছর অতিক্রম হওয়ার পর প্রত্যেকের লাইসেন্সটি আবার নবায়ন করতে হয় যাকে আমরা ইংরেজিতে Driving License Re-New বলে।
আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো কীভাবে আপনারা ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন বা রিনিউ করবেন?
প্রথমে জেনে নেয়া যাক ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন না করলে কী হবে?
আমরা জানি ড্রাইভিং লাইসেন্স মোটরবাইক চালানোর ক্ষেত্রে অত্যাবশ্যকীয় বিষয় তাই এর মেয়াদ শেষে নবায়ন করা খুবই জরুরী। আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ যদি শেষ হয়ে যায় এবং তা যদি নবায়ন করা না হয় তাহলে প্রতি বছর আপনাকে ২৩০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
অন্যদিকে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন থেকে পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত সুযোগ থাকে নবায়নের জন্য। এক্ষেত্রে কোন প্রকার জরিমানা গুনতে হবে না।
এখন জেনে নেয়া যাক কীভাবে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর নবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন?
ধাপ ১: ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ:
* ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি,
* জাতীয় পরিচয়পত্রের( NID ) এর ফটোকপি
* নাগরিক সনদপত্রের ( সিটি কর্পোরেশন অথবা এলাকায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে ) সত্যায়িত ফটোকপি।
* পাসপোর্ট সাইজের ছবি ৪ কপি।
* পুরাতন ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড।
read more: মটর ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন..!
ব্যাংক পেমেন্টের জন্য আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি নিয়ে বিআরটিএ অফিসের নবায়ন অফিসারের কাছ থেকে সত্যায়িত করতে হবে যা ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার সময় ব্যাংক ডিপোজিট ফরমের সাথে জমা দিতে হবে। এই টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক ড্রাফট পেপার সংগ্রহ করে আপনার কাছে রাখতে হবে।
ধাপ ২: এই পর্যায়ে আপনাকে ২ ধরনের ফর্ম পূরণ করতে হবে। তা হলো-
১- নবায়ন ফর্ম
২- মেডিকেল ফর্ম।
১- নবায়ন ফর্মঃ নবায়ন ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয় বিষয়গুলো হলো- যদি আপনি বিবাহিত হন সেক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর নাম/ স্বামীর নাম ও মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। যদি অবিবাহিত হন সেক্ষেত্রে আপনার পিতার নাম/ মাতার নাম দিতে হবে। এই ফর্ম আপনি চাইলে অনলাইন থেকে পূরণ করতে পারবেন।
২- মেডিকেল ফরমঃ মেডিকেল ফর্ম এর চেক আপ লিস্ট অনুযায়ী সকল বিষয় চেক করে ফর্মটি একজন এমবিবিএস ডাক্তার দ্বারা মেডিকেল টেস্ট করিয়ে তা সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। এই ফর্মটি আপনি বিআরটিএ অথবা এর আশেপাশের ফটোকপির দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
জমা দিতে হবে
এই দুইটি ফর্মে ১ কপি করে সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে। এরপরে নবায়ন ফর্ম ও মেডিকেল ফর্ম পূরণ করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, নাগরিক সনদ পত্রের ফটোকপি, ব্যাংক স্লিপের ফটোকপি, মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের আসল কপি সব কিছু একত্রে জমা দিতে হবে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে-
উপরের সকল ডকুমেন্টসের সাথে পুলিশ তদন্তের প্রতিবেদন সত্যায়িত করতে হবে। সাথে ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজ ও ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি জমা দিতে হবে এবং পুনরায় ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হবে।
আপনার যদি সকল ডকুমেন্টস সঠিক থাকে তাহলে সেদিন অথবা পরের দিন আপনি একটা ডুপ্লিকেট বা নমুনা ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন যা দিয়ে আপনি আপনার বায়োমেট্রিকসের জন্য এসএমএস না আসা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন।
ধাপ ৩: বায়োমেট্রিক এসএমএস আসলে বা আপনাকে কোন নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া থাকলে সেই তারিখ অনুযায়ী বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে আপনার ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তুলে আসতে হবে। সেদিনই আপনি একটা কম্পিউটার কপি পাবেন।
ধাপ ৪: ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তোলার ৩ মাসের মধ্যে সেই কম্পিউটার কপি দিয়ে আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
উপরিউক্ত ধাপগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স খুব সহজেই নবায়ন বা রিনিউ করতে পারবেন।