জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাজী সেলিমকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা বহাল রাখেন বিচারপতি মো. পরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। আদালত তার রায়ে জরিমানা পরিশোধ করেননি। সেলিমকে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। তিনি আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল ও তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ ছাড়া এ মামলায় হাজী সেলিমের বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে এ মামলায় ট্রায়াল কোর্টের ৩ বছরের কারাদণ্ড থেকে হাজী সেলিমকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
দুদকের করা এ মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্ট তাকে সেই সাজা থেকে খালাস দেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হাইকোর্টে ফের মামলার শুনানি হয়।
জরুরী পরিস্থিতিতে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর লালবাগ থানায় হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ২৭ এপ্রিল, ২০০৮, ট্রায়াল কোর্ট তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে বিশ্বকাপের পতাকা ও জার্সির টাকায় ১০০ পথশিশুকে শীতবস্ত্র উপহার
পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২ জানুয়ারী, ২০১১ হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাজী সেলিমের আপিল হাইকোর্টে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৯ মার্চ শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন এবং অপরজনকে তিন বছরের সাজা থেকে অব্যাহতি দেন। এ রায়ের পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম হাজী সেলিম আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ।
আত্মসমর্পণ ছাড়াও জামিন আবেদনসহ দুটি আবেদন করেন হাজী সেলিম। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে হাজী সেলিমকে কারাবিধি অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী হাজী সেলিমকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।