জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইলঃ বৃদ্ধা শ্বশুর-শাশুড়ির সেবাযত্ন করলেই পুত্রবধূকে উপহার হিসেবে দেয়া হচ্ছে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, পোড়াবাড়ির চমচম ও ক্রেস্ট সেটি দিচ্ছে পুলিশ। এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন। বিষয়টি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। একই সাথে উক্ত পরিবারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মীর মোশারফ হোসেন।
স্থানীয় কলেজ পাড়ার শিউলি বলেন, আমি ‘টাঙ্গাইল জেলা সংবাদ’ নামে একটি পেজে পোস্ট দেখতে পাই। সেটি দেখে আমার খুব ভালো লাগে। আমিও আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজের বাবা-মায়ের মতো ভালোবাসি এবং তাদের সেবা-যত্ন করি। তাদের সেবা করে আমি আত্মতৃপ্তি পাই। বিষয়টি অবগত করার জন্য আমি পোস্টে উল্লেখিত নাম্বারে ফোন করি। পরবর্তীতে বিকেল বেলায় দেখি ওসি স্যার নিজে এসে আমাকে উপহারগুলো তুলে দেন।
অন্য আর এক গৃহবধূ মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আমি আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে এমনিতেই দেখাশোনা করি। ভবিষ্যতেও একই রকম তাদের সেবা করে যাব তবে আমি যে পুরস্কার পেয়েছি, এতে নিজের প্রতি আরও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। ’
গৃহবধূ মাহমুদার শ্বশুর মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমার নিজের মেয়ে আমাকে যেমন ভালোবাসে, ছেলের বউও ঠিক তেমনি আমাকে ভালোবাসে। আমাদের দেখভাল ও সেবা-যত্নে কোনো ত্রুটি করে না। এমন ছেলের বউ পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে ও ছেলে বউ আমাদের সেবা করে। একজন পুলিশ অফিসার আমার বউমাকে পুরস্কৃত করেছেন। পুরস্কার পেয়ে সে তো আত্মহারা।’
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করেছি বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের অবহেলায় বাবা-মা অযত্নে জীবনযাবন করেন। অনেকেই ঠিকমতো খাবারও দেন না। আর্থিক অবস্থা ভালো সন্তানরা বাবা-মাকে বাসায় রেখে অন্য কোথাও ভাড়া থাকে বউ-বাচ্চা নিয়ে। অনেক সন্তানই তো ভুলেই যান যে তার বাসায় বৃদ্ধ বাবা-মা আছে যারা দিনরাত পরিশ্রম করে তাদের মুখে আহার ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছিলেন। অনেক সন্তান কাজের প্রয়োজনে বাইরে ব্যস্ত থাকেন তারা চাইলেও সময় দিকে পারেন না পরিবারকে। তাদের বাবা-মা, পুত্রবধূর কাছে বেশি সময় কাটান। আমার উদ্দেশ্য ওই পুত্রবধূদের উৎসাহিত করা, আমরা কেও ই চাই না কোন বাবা মায়ের বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা হোক।’