বর্তমান চুল পড়া সমস্যা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। চুল পড়া নিয়ে যারা দুশ্চিন্তায় ভোগেন আজকে তাদের জন্য কিছু টিপস। আজকে এমন কিছু খাবারের নাম জানতে পারবেন যা খেলে আপনার চুল পড়া কমবে সাথে চুল ঘন, কালো ও মজবুত হবে। মানুষের দৈনন্দিন গড়ে ৫০-১০০ চুল পড়তে পারে তাই যাদের এই পরিমাণ চুল পড়ছে তারা চুল পড়া নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তাই করবেন না। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন ১০ টি খাবার যা খেলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে সাথে চুলকে করবে ঘন, কালো ও মজবুত।
১. টক ফলঃ টক ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। সুন্দর চুলের জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টক ফল যেমন- কমলা, মাল্টা, লেবু, আমলকি, কিউই ফল ইত্যাদি নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন। ভিটামিন সি এর অভাবে চুল ভেঙে যেতে পারে তাই এসকল খাবার থেকে ভিটামিন সি সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও টমেটো, পেয়ারা থেকেও এই ভিটামিন সংগ্রহ করতে পারেন।
২. টক দইঃ প্রোটিনের একটি উৎসের নাম টক দই। এতে আরও রয়েছে জিংক। তাই খাবারের তালিকায় অথবা অন্য খাবারের সাথে টক দই খেতে পারেন।
৩. ছোলাঃ ছোলায় আছে আয়রন, জিংক ও প্রোটিন যা চুলের জন্য সবসময়ের জন্য উপকারী। এই তিনটা উপাদানের যে কোনো একটার অভাবে চুল পড়তে পারে তাই মাঝে মাঝে খাবারের মধ্যে ছোলা রাখতে পারেন।
৪. বিভিন্ন ধরনের বীজঃ বিভিন্ন ধরনের বীজ আপনার চুলকে মজবুত ও ঘন করতে পারে, যেমন- চিয়া বীজ, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, তিসির বীজ ইত্যাদি। এসবের মধ্যে আছে বায়োটিন, ওমেগা থ্রী ফ্যাট, জিংক, সেলেনিয়াম। তরকারির সাথে অল্প পরিমাণে এসব বীজ খেতে পারেন।
৫. ডালঃ ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে সাথে আয়রন আছে। আয়রন আমাদের চুলের ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ করে চুলকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডালে ফোলেট ও জিংক আছে যা চুলের জন্য উপকারী। তাই পাতলা ডাল না খেয়ে কিছুটা ঘন ডাল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৬. পালং শাকঃ পালং শাকে গুরুত্বপূর্ণ চারটি উপাদান রয়েছে যা চুকের ভেতর থেকে প্রোটিন জোগায় ও চুলকে ঘন কালো ও মজবুত করে। উপাদানগুলো হলো- ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন ও ফোলেট। এই সবগুলোই আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারী। তাই খাবারের তালিকায় পালং শাক রাখতে পারেন।
৭. ডিমঃ সুন্দর ও মজবুত চুলের জন্য ডিম অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকায় তা শরীর ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। প্রোটিনের অভাবে চুল পড়তে থাকলে ডিম আপনার খুব ভালো কাজে দিতে পারে। তাই প্রোটিনের অন্যতম উৎস হিসেবে প্রতিনিয়ত ডিম খেতে পারেন।
৮. তৈলাক্ত মাছঃ তৈলাক্ত মাছ বলতে ওমেগা থ্রী সম্পন্ন সামুদ্রিক মাছই নয়, আমাদের দেশী অনেক মাছ যেমন- ইলিশ, কৈ, মলা, চাপিলা ইত্যাদি তৈলাক্ত মাছ বলে বিবেচনা করা হয়। এসব মাছ চুল ঘন ও কালো করতে সাহায্য করে সাথে এসব মাছ থেকে প্রচুর প্রোটিন পাওয়া যায়। তাই আপনার সুবিধা অনুযায়ী এসব মাছ খেতে পারেন।
Read more চুলের যত্নে ঘরোয়া ৫ প্যাক || পেঁয়াজের রসের মাস্ক || চুলের যত্নে পেঁয়াজ এবং তার ব্যবহার বিধি
৯. হলুদ সবজি ও কমলা রঙের ফলমূলঃ মিষ্টি আলু, গাঁজর, আম, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। এই জাতীয় খাবারে পচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। চুলের গোড়া অর্থ্যাৎ যেখান থেকে চুল বড় হয় সেখানে প্রয়োজন হয় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। আর এই ভিটামিন হলুদ শাক-সবজি ও ফলমূল থেকে পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কিছু হলুদ ফল ও সবজি থাকা উচিত।
১০. বাদামঃ বাদাম চুলের জন্য খুবই উপকারী খাবার। বাদামের অনেক প্রকার আছে যেমন- চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি। এসকল বাদামে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, বিশেষ করে ওমেগা সিক্স ফ্যাট যা চুলের গোড়া সতেজ ও শক্ত করতে ও চুল লম্বা করতে সাহয্য করে। এই ওমেগা সিক্স ফ্যাট শরীর তৈরি করতে পারে না তাই খাবার থেকে এটি সংগ্রহ করতে হয়। তাই প্রতিদিনের খাবারের সাথে কিছু বাদাম রাখতে পারেন তবে বেশী পরিমাণে খাবেন না এতে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
Reference: Dr Tasnim Jara